এসির অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে আনার উপায়

0
382

গরমে কিছূটা স্বস্তির জন্য যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা সবাই চাই বাসায় কিংবা অফিসে এয়ার কন্ডিশনার (এসি) ইন্সটল করতে। অন্যান্য গৃহস্থালি বৈদ্যুতিক এপ্লায়েন্স এর মধ্যে এসি কিছুটা ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও এটি এখন দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য বিষয়ে রূপ নিয়েছে। বিগত দশকের কথাই যদি চিন্তা করি তাহলে নিজ প্রয়োজনে খুব অল্প কিছু পরিবারই এসি ব্যবহার করতো তবে এখনকার চিত্র অনেকটাই ভিন্ন।

বৈশ্বিক উশ্নায়ন এর মাত্রা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাওয়া এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়ে যাবার কারণে এক সময়ের বিলাসী পন্য “এসি” রূপান্তরিত হয়েছে অপরিহার্য বস্তুতে। EMI, Credit Facility এর মাধ্যমে এখন আমরা বাসায় কিংবা অফিসে এসি ইন্সটল করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারলেও বোঝা হিসাবে সামনে আসে “বিদ্যুৎ বিল।”

আপনি যদি ১০০ জন মানুষকে জিজ্ঞাসা করেন তাহলে সবাই বলবে এসি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনেক কিন্তু এর সাথেই শর্ত হিসাবে জানতে পারবেন অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল এর কারণে এসি ব্যবহার করতে আগ্রহী নন। বিষয়টি শতভাগ সত্য। কেননা এমন অনেকেই আছেন যারা গরম থেকে স্বস্তির জন্য বাসা কিংবা অফিসে এসি ব্যবহার করতে আগ্রহী কিন্তু বিদ্যুৎ বিল এর চিন্তা করেই অনেকে এসি ব্যবহার থেকে সরে আসেন।

এসিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি এক সময় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করলেও বর্তমানে সেই প্রযুক্তির অনেক বেশী পরিবর্তন এসেছে যার ফলে এখনকার এসিগুলো তুলনামূলক কম বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে কাজ করে ফলশ্রুতিতে বাড়তি বিল এর বোঝা থেকে কিছুটা হলে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। ভারতের এনার্জি রেগুলেশন এর একটি গবেষণায় দেখা যায়, সঠিক নিয়মে যদি এসি ব্যবহার করা হয় তাহলে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ এর ব্যবহার কমিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব।

আজকের আর্টিকেলে আমরা এমন কিছু টিপস আপনাকে প্রদান করবো যেগুলো মাধ্যমে আপনি এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর উপায় জানাতে পারবেন এবং টিপসগুলো যদি অনুসরন করেন তাহলে অনেকাংশেই বাড়তি বিদ্যুৎ বিলের বোঝা থেকে মুক্তি পাবেন। তাহলে চলুন শুরু করি।

সঠিক এসি নির্বাচন

ব্যবহারকারী হিসাবে আমাদের সব থেকে বড় ভুল হচ্ছে সঠিক এসি নির্বাচন। এসি ক্রয় করার আগে অবশ্যই আপনার রুম এর পরিমাপ সঠিকভাবে জেনে নিতে হবে। এছাড়াও, যেই রুমে এসি ইন্সটল করবেন সেই রুমে কি পরিমান সূর্যের তাপ প্রবেশ করে সেটিও বিবেচনা করা তারপর এসি নির্বাচন করতে হবে।

মুলত, দুই ক্যাটাগরির ক্রেতা রয়েছেন যাদের মধ্যে একজন চিন্তা করবেন –

রুমের জন্য ১ টন এর এসি পারফেক্ট হলেও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের (বেশী টন সক্ষমতার) এসি ইন্সটল করবেন। অন্যদিকে, অন্য ক্যাটাগরির ক্রেতা চিন্তা করবেন, রুমের জন্য ১.৫ টন এসির উপযুক্ত হলেও ১ টন এসি ব্যবহার করার চিন্তা করবেন।

উপরের এই দুই জনই সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করেননি। যার ফলে, একটি ক্ষেত্রে রুমের আয়তনের তুলনায় এসির সক্ষমতা বেশী থাকার কারনে, দীর্ঘমেয়াদে এসির কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস পাবে অন্যদিকেও, বড় আয়তনের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম শক্তির এসি ব্যবহার করার কারনে, শীতলীকরণ কাজে এসি বেশী পরিমান বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করবে। যা আপনার বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হতে পারে।

সুতরাং, এসি ক্রয় করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে এগুলো মাথায় রাখতে হবে। ক্রেতা হিসাবে এটি নির্ণয় করা আপনার জন্য জটিল হতে পারে তাই আমাদের পরামর্শ থাকবে এসি কেনার পূর্বে এক্সপার্ট এর সহায়তা গ্রহন করার।

আপনি চাইলে সেবক টীম এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এদের অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান রয়েছে যারা আপনার রুমের আয়তন , রুমের অবস্থান পরিমাপ করে সঠিক এসি নির্বাচনে আপনাকে পরামর্শ প্রদান করতে সক্ষম। এর জন্য আপনি চাইলে সেবক টীম এর সাপোর্ট হটলাইন নাম্বার – (+88) 01400414703-04 কিংবা ইমেইল এর মাধ্যমেও জানাতে পারেন – info@sebokbd.com

সঠিক ইন্সটলেশন পদ্ধতি

অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসার অন্যতম আরও একটি কারণ হচ্ছে সঠিক প্রক্রিয়ায় এসি ইন্সটল করা। বাজার থেকে এসি ক্রয় করার পর অবশ্যই আপনাকে এক্সপার্ট টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে সেটি ইন্সটল করে নিতে হবে। এসির ইন্সটলেশন প্রক্রিয়াটি কোনও সহজ বিষয় নয়। কেননা ইন্সটল করার হয়ে যাবার পর থেকেই দীর্ঘমেয়াদে এসি আপনার রুমের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার কাজ শুরু করে।

ইন্সটলেশন এর সময় যদি নিম্ন-মানের উপকরণ ব্যবহার করা হয় সেটি আপনার এসির জন্য এক দিকে যেমন হুমকিস্বরূপ অন্যদিকে, এর ফলে শীতলীকরণ কাজে এসিকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করতে হয় যার সরাসরি প্রভাব পড়বে আপনার মাসিক বিদ্যুৎ বিল এর উপর।

নিম্নমানের ইন্সটলেশন কিট (যন্ত্রাদি) এবং অনভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান দ্বারা এসি ইন্সটল করার কারনে একদিকে অতিরিক্ত বিল এর বোঝা যেমন আপনাকে বয়ে বেড়াতে হবে অন্যদিকে, দীর্ঘমেয়াদে এসির কার্যকারিতাও হ্রাস পেতে থাকবে। এমনকি বড় আকারের দুর্ঘটনাও হতে পারে।

sebokbd.com, অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান, উন্নত মানের ইন্সটলেশন কিট ব্যবহার করে সেবা প্রদান করে থাকে এবং সেবক টীম সার্ভিস এর গ্যারান্টিও প্রদান করে থাকে। সুতরাং, চাইলে এদের সহায়তা গ্রহন করতে পারেন। এদের ইন্সটলেশন প্যাকেজগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন এই লিংক থেকে –>

সূর্যের আলো এবং রুমের ইন্স্যুলেশন

এসির আউটডোর ইউনিট ইন্সটলেশনের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেখানে অধিকাংশ সময় সরাসরি সূর্যের তাপ না পড়ে। যদি অতিরিক্ত সূর্যের তাপ সারসরি আউটডোর ইউনিট এর মধ্যে পড়ে তাহলে অপেক্ষাকৃত বেশী বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহৃত হয়ে এসি পরিচালিত হবে এবং যার ফল হিসাবে বাড়তি বিল এর বোঝা আপনাকে বহন করতে হবে।

এছাড়াও, একাধিক দরজা এবং জানালা রয়েছে এমন রুম এসির ব্যবহার করার জন্য উপযুক্ত নয়। কেননা যদি রুমের মধ্যে বেশী জানালা থাকে তাহলে এর মাধ্যমে অতিরিক্ত সূর্যের তাপ প্রবেশ করে যার ফলে এসির জন্য রুমের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পরে। ফলশ্রুতিতে, এসিকে সেই তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার করতে হয়। যা বিদ্যুৎ বিল এবং এসির স্থায়িত্ব দুইটির জন্যই খারাপ।

অন্যদিকে, যেই রুমে এসি ইন্সটল করবেন নিশ্চিত হয়ে নিবেন সেই রুমে এমন কোনও ছিদ্র / ফুটো ,ফলস সিলিং এর গ্যাপ নেই। কেননা এইগুলোর মাধ্যমে রুমের ভিতরের বাতাস প্রবাহিত হতে পারে ফলে রুম এর তাপমাত্রা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে যাবে। দরজা এবং জালানা ভাল করে লাগানোর পর চেক করে দেখবেন সেটিতে কোনও গ্যাপ থাকে কিনা। যদি গ্যাপ থাকে তাহলে অবশ্যই এই গ্যাপগুলোকে এমনভাবে বন্ধ করতে হবে যাতে করে বাতাস প্রবাহিত হতে না পারে।

অতিরিক্ত এসির ব্যবহার

প্রয়োজন এর সময় ব্যতীত বাকি সময়ে এসি ব্যবহার না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে করে আপনার এসি যেমন ভালো থাকবে ঠিক তেমনি বিদ্যুৎ বিল এর পরিমানও কমে তুলনামূলকভাবে কমে আসবে। যেমন, রুম ঠাণ্ডা হয়ে যাবার পর যদি রুমে না থাকেন তাহলে অনুগ্রহ করে এসিটি বন্ধ করে দিন। এতে করে এসি সচল থাকবে না অর্থাৎ, কোনও বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে না।

নিয়মিত সার্ভিসিং এবং রক্ষণাবেক্ষণ

“রক্ষণাবেক্ষণ এবং সার্ভিসিং” এই দুইটি বিষয় সবথেকে বেশী পরিমান অবহেলিত থাকে। কেননা, আমরা মনে করি নতুন এসি ইন্সটল করার পর তেমন কিছুই করার দরকার নেই। ২/৩ বছর এমনি চলে যাবে কিছুই করতে হবেনা।

বিষয়টি ভ্রান্ত এবং ভুল ধারনা! এসি নতুন কিংবা পুরাতন যেটিই হোক না কেন, ব্যবহার এর ভিত্তিতে অবশ্যই যন্ত্রটিকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর সার্ভিসিং করিয়ে নেয়া উচিৎ। নিয়মিত সার্ভিসিং এর মাধ্যমে এসির ইনডোর এবং আউটডোর ইউনিট এর সাথে যুক্ত সকল যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করা, ধুলাবালি পরিষ্কার করা হয় যা এসির ঠাণ্ডা করার সক্ষমতা বজায় রাখে।

নিয়মিত এসি সার্ভিসিং কেন দরকার সেই সম্পর্কে জানার জন্য অনুগ্রহ করে “এসি সার্ভিসিং এর প্রয়োজনীয়তা” আর্টিকেলটি পড়ে দেখতে পারেন। অন্যদিকে, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করার ফলে বেশী কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে যেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন “এসির কমন কিছু সমস্যা” আর্টিকেলটি থেকে।

এছাড়াও, এসির মধ্যে বিদ্যমান রেফ্রিজারেন্ট কিংবা গ্যাস এর পরিমান, ইভাপোরেটর এবং কন্ডেনসার কয়েলগুলোতে কোনও লিকেজ, ড্রেনেজ পাইপ ঠিক আছে কিনা এগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিৎ। এতে কোনও ত্রুটি যদি দেখা দেয় সেটি বড় আকারের সমস্যায় পরিণত হবার আগেই সমাধান করা সম্ভব। এতে করে এক দিকে আপনার এসির কার্যকারিতা যেমন ভাল থাকবে অন্যদিকে, সমস্যা সমাধান এর জন্য বড় আকারের অর্থও আপনাকে খরচ করতে হবেনা।

এসির মধ্যে বেশকিছু এয়ার-ফিল্টার” থেকে যেগুলোতে প্রচুর পরিমানে ধুলাময়লা জমে। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না রাখলে একদিকে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হয় অন্যদিকে, আপনার রুমের জন্যও এটির অস্বাস্থ্যকর। তাছাড়া গবেষণায় দেখা যায়, অপরিষ্কার এয়ার-ফিল্টার ৫%-১৫% অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের জন্য দায়ী।

তাহলে এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কতদিন পর এসি সার্ভিসিং করানো উচিৎ?

এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার ব্যবহার এর উপর এবং আপনার বাসার অবস্থান এর উপর। যেমন, ধরুন অনেকের বাসা এমন স্থানে হতে পারে যেখানে প্রচুর ধূলা বাহির থেকে রুমে প্রবেশ করে। সাধারণত, প্রধান সড়কের কাছেই যদি বাসার অবস্থান হয় তাহলে ধুলাময়লা হবার সম্ভাবনাও থাকবে অনেক বেশী। এছাড়াও, যারা বেশী এসি ব্যবহার করেন তাদের জন্য আমাদের পরামর্শ হচ্ছে প্রতি ২-৩ মাস অন্তর অন্তর একবার সার্ভিসিং করিয়ে নেয়া।

অন্যদিকে, যারা তুলনামূলক কম এসি ব্যবহার করেন এবং বাসায় ধূলার পরিমান কম তারা চাইলে ৫-৬ মাস পর সার্ভিসিং করিয়ে নিতে পারেন। এতে করে আপনার মুলব্যান এসি যেমন ভাল থাকবে ঠিক তেমনই এসি, রুম ঠাণ্ডা করতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করবেনা। ফলাফল হিসাবে আপনার বিদ্যুৎ বিল এর পরিমানও হবে তুলনামূলক কম।

এসি সার্ভিসিং করানোর ক্ষেত্রে কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন –

  • অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট সময় পর নিয়মিত ব্যবহৃত এসির সার্ভিসিং করিয়ে নিতে হবে।
  • সার্ভিসিং করানোর জন্য দক্ষ টেকনিশিয়ানদের সহায়তা নিতে হবে।
  • সার্ভিসিং এর অর্থ শুধু ধুলাবালি পরিষ্কার করা নয়। সম্পূর্ণ সিস্টেমটি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
  • এসিতে কোনও সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষনিক অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে।
এসির সার্ভিসিং এবং রক্ষণাবেক্ষণ এর জন্য সেবক টীম এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এরা অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান এর মাধ্যমে সেবা প্রদান করে থাকে। এছাড়াও এসি সম্পর্কিত কোনও সমস্যা কিংবা পরামর্শের জন্য এদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এর জন্য আপনি চাইলে সেবক টীম এর সাপোর্ট হটলাইন নাম্বার – (+88) 01400414703-04 কিংবা ইমেইল এর মাধ্যমেও জানাতে পারেন – info@sebokbd.com

এছাড়াও, এসি সার্ভিসিং এর জন্য sebokbd.com এর বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ রয়েছে। সেবক টীম গ্যারান্টি সহকারে সেবা প্রদান করে থাকে। সার্ভিসিং প্যাকেজগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই লিংক থেকে –>

তাপমাত্রা অতিরিক্ত কমিয়ে রাখা

গরমের সময় বাহিরের তাপমাত্রা অনেক বেশী থাকে। ক্ষেত্রে বিশেষে রাজধানী ঢাকার গড় তাপমাত্রার পরিমান থাকে প্রায় 32-35°C পর্যন্ত। আমরা সবাই তখন কিছুটা প্রশান্তির জন্য এসির তাপমাত্রা অনেকবেশী কমিয়ে রাখি। বিষয়টি স্বাভাবিক কিন্তু, এসি এবং বিদ্যুৎ বিল যদি স্বাভাবিক রাখতে হয় তাহলে আপনাকে কিছু নির্দেশনা মেনে এসি ব্যবহার করতে হবে।

আপনি কি আসলে জানেন এসি কিভাবে কাজ করে? যদি না জেনে থাকেন তাহলে অনুগ্রহ এসি কিভাবে কাজ করে এই আর্টিকেলটি প্রথমে পড়ে নিন।

এসি মুলত নির্দিষ্ট একটি তাপমাত্রায় এসে কম্প্রেসরকে বন্ধ করে দেয়। যখন কম্প্রেসর বন্ধ থাকে তখন খুব অল্প পরিমান বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে সেটি কাজ করতে থাকে। এখন আপনার রুমের তাপমাত্রা যদি 20-22°C নির্ধারণ করে রাখেন তাহলে এসির কমপ্রেসর বন্ধ হবেনা এবং এসি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে রুম ঠাণ্ডা করতে থাকবে। ফলাফলস্বরূপ, মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল এর পরিমান দেখে আপনি কোমায় চলে যেতে পারেন।

ভারতীয় এনার্জি রেগুলেশন এর গবেষণায় দেখা যায় এসির তাপমাত্রা 24°C কিংবা এর উপরে রেখে যদি ব্যবহার করেন তাহলেই প্রায় ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ এর অপচয় রোধ করা সম্ভব। অর্থাৎ, বুঝতেই পারছেন আপনার পকেটের উপর প্রেশারও কমে আসবে।

24°C কিংবা এর উপরে রেখে এসি ব্যবহার করলে একটি নির্ধারিত সময়ে কমপ্রেসর শক্তি গ্রহন করা বন্ধ করে দিবে এতে করে বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার হবেনা। সুতরাং, বিদ্যুৎ অপচয় কমিয়ে আনা সম্ভব।

সিলিং ফ্যান এর ব্যবহার

রুমে শুধুমাত্র এসি ব্যবহার না করে এর সাথে যদি সিলিং ফ্যান ব্যবহার করেন তাহলে একদিকে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহ যেমন বৃদ্ধি পাবে ঠিক তেমনই এসির তাপমাত্রা বেশী না কমিয়েই প্রশান্তির ঘুম দিতে পারবেন। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি অনেকটা কার্যকর।

যেমন ধরুন, রাতে ঘুমানোর সময় এসির তাপমাত্রা 24°C কিংবা এর উপরে নির্ধারণ করলেন এবং এর সাথে ধীর গতিতে সিলিং ফ্যানও চালু করে দিলেন। এতে একদিকে সিলিং ফ্যান এর কারনে ঠাণ্ডা বাতাস রুমের সম্পূর্ণ অংশে পৌঁছে যাবে এবং অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত বেশী তাপমাত্রায় এসি ব্যবহার করেও ঠাণ্ডা বাতাসের স্পর্শ পাবেন।

এতে করে আপনার এসির কার্যকারিতাও ভালো থাকবে এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎও অপচয় হবেনা।

সাধারণ কিছু পরামর্শ একনজরে

অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল থেকে বাঁচার জন্য কিছু নির্দেশনা মেনে এসি ব্যবহার করলেই আপনাকে পকেট নিয়ে তেমন চিন্তা করতে হবেনা।

  • এসির ব্যবহার কমিয়ে আনা। একদম প্রয়োজন না হলে এসি ব্যবহার না করাই ভালো।
  • এসি ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই রুমের দরজা-জানালা ঠিকমতন বন্ধ আছে কিনা সেটি নিশ্চিত হয়ে নেয়া যাতে করে, ঠাণ্ডা বাতাস রুম থেকে বের হতে না পারে।
  • এসির তাপমাত্রা 24°C কিংবা এর উপরে নির্ধারণ করে নেয়া। এর নিচের তাপমাত্রা ব্যবহার করলে এসি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করবে যা আপনার জন্য বাড়তি বিলের ধাক্কা।
  • এসির এর সাথে সিলিং ফ্যান ব্যবহার না করা।
  • নতুন প্রযুক্তির এসিগুলোতে “Eco Mode” নামে একটি অপশন পাবেন এটি ব্যবহার করা। এছাড়াও, “AUTO” অপারেশন নির্বাচন করার মাধ্যমে এসি নিজ থেকে রুমের তাপমাত্রা পরিমাপ করে চালু থাকবে। এই অপশনটিও চাইলে ব্যবহার করতে পারেন।
  • “টাইমার” এর মাধ্যমে এসি ব্যবহার করা। যেমন, ৫ ঘণ্টা সময় সেট করে দিলেন, এরপর এসি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজ থেকে বন্ধ হয়ে যাবে। এই টাইমার বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে অনেকটা কার্যকরী।
  • নিম্নমানের এসি ব্যবহার না করা। খরচ কম হবার কারনে অনেকেই আন-অফিসিয়াল এবং খারাপ ব্র্যান্ড এর এসি ব্যবহার করেন। এই এসিগুল ঠাণ্ডা বাতাস দিবে ঠিকই কিন্তু মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল দেখে আপনাকে গরম হয়ে যেতে হবে। Sebokbd.com এর রয়েছে অফিসিয়াল বিভিন্ন ব্র্যান্ড এর এসি। যেগুলোতে ডিসকাউন্ট এর সাথে আপনি পাবেন অফিসিয়াল গ্যারান্টি এবং ভালো মানের বিক্রয়ত্তর সেবা। সেই সাথে বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে সারাদেশে ফ্রি হোম-ডেলিভারি সার্ভিস। বিভিন্ন ব্র্যান্ড এর এসিগুলোর আপডেটেড প্রাইস এবং ফিচার জানতে এই লিংক ক্লিক করুন –>

ইনভার্টার প্রযুক্তির ব্যবহার

এই বিষয়টি সবার শেষে উল্লেখ করার প্রধান কারন হচ্ছে, সবাই ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি ব্যবহার করেন না। কেননা সাধারণ এসির তুলনায় ইনভার্টার প্রযুক্তির এসির বাজারমুল্য ৫০-৬০% পর্যন্ত বেশী। এই কারনে সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি ব্যবহার করা সম্ভব হয়ে উঠেনা এই কারনে বিষয়টি নিয়ে সবার শেষে আমরা আলোচনা করেছি।

উপরের সবগুলো পরামর্শ মেনেও যদি বাড়তি বিদ্যুৎ বিল এর বোঝা আপনার কাঁধ থেকে না সড়ে তাহলে বুঝবেন ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। মুলত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এর কারনেই সাধারণ এর তুলিনায় ইনভার্টার প্রযুক্তির এসিগুলো কম বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে যার ফলে ৩০-৪০% পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে আনা সম্ভব।

ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি কিভাবে কাজ করে এবং এর সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে ইতিমধ্যেই বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। অনুগ্রহ করে এই লিংক ক্লিক করে আর্টিকেলটি পড়ে নিতে পারেন।

উপরের পরামর্শগুলো অনুসরন করে আপনি নিজেই বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে আনতে পারেন। আর্টিকেলটির শুরুতেই বলেছিলাম, ব্যবহারকারী হিসাবে আপনার হাতেই রয়েছে বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে আনার উপায়গুলো। এই কৌশলগুলো মেনে চলতে খুব কষ্ট করার কিছুই নেই শুধু প্রয়োজন নিজ সচেতনতা।


আশা করছি, আর্টিকেলটি আপনার ভাল লেগেছে। যদি এই আর্টিকেল সম্পর্কিত কোনও প্রশ্ন কিংবা মতামত জানাতে চান তাহলে অনুগ্রহ করে নিচের কমেন্ট সেকশনে সেটি জানাতে পারেন। আমরা চেষ্টা করবো আপনাকে সর্বাত্মক সহায়তা করার।

কমেন্ট সেকশন

Please enter your comment!
Please enter your name here